অফিস ডেস্ক
পানিতে খাবার দিতেই ভেসে উঠছে লাল, নীল, হলুদ, সাদা, কালো আর কমলা রঙের মাছ। নানা রঙের এসব মাছের ছটায় মুগ্ধ হচ্ছে যে কেউ। বাহারি রঙের এইসব মাছ চাষ করে আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন গ্রামের যুবক সাগর হোসেন।
উদ্যোক্তা সাগর হোসেন রামজীবন ইউনিয়নের মোজাফফর হোসেনের ছেলে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে তিনি বেছে নিয়েছেন রঙিন মাছ চাষ।
এরমধ্যেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অর্জন করেছেন একাধিক পুরস্কার। ২০১৯ সালে পড়াশোনার পাশাপাশি ইউটিউব দেখে বাড়ির উঠোনে মাত্র ৩ হাজার টাকা ব্যয়ে দুটি চৌবাচ্চা তৈরি করে শুরু করেন রঙিন মাছ চাষ। প্রথমে শখের বশে শুরু করলেও বর্তমানে লাভজনক হওয়ায় ছয়টি পুকুরে চাষ করছেন সাত লাখেরও বেশি মাছ।
তার ফার্মে রয়েছে মলি, গাপ্পি, রেইনবো ফিশ, অ্যাঞ্জেল ফিশ, ফাইটার ফিশ, গোল্ডফিশসহ প্রায় ২০ প্রজাতির রঙিন মাছ। এগুলো বিক্রি হচ্ছে তার নিজ ফার্মের পাশাপাশি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। শুধু জেলা নয়, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহী ছাড়াও মাছ যাচ্ছে রাজধানী ঢাকায়।
উদ্যোক্তা মো. সাগর হোসেন জানান, বর্তমানে প্রতি মাসে রঙিন মাছ চাষ করে খরচ বাদে আয় হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। সরকারিভাবে সহায়তা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব।
প্রথম দিকে তার রঙিন মাছ চাষ দেখে পরিবার ও স্থানীয়রা হাসি-ঠাট্টা করলেও এখন সফলতা দেখে খুশি তারা। এমনকি তার দেখে এলাকার অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন রঙিন মাছ চাষে। স্থানীয় যুবক ওবায়েদুল ইসলাম বলেন, প্রথমে কেউ ভাবেনি এটি বাণিজ্যিকভাবে এত লাভজনক হবে। এখন অনেক বেকার যুবক রঙিন মাছ চাষে এগিয়ে আসছে।
গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রাশেদ জানান, সাগর হোসেনের উদ্যোগের প্রতি সার্বিক খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। তাকে দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা। অন্য মাছের তুলনায় বেশি লাভজনক হওয়ায় রঙিন মাছ চাষে অনেকের আগ্রহ বাড়ছে।