জরুরি বিভাগে ‘মৃত্যুর মিছিল’, চিকিৎসক সংকটে পদে পদে ভোগান্তি

অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫ | সময়ঃ ০১:৩০
photo

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। ছবি:সংগৃহীত 

 

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট চরমে। ২৫০ শয্যার বিপরীতে যেখানে চিকিৎসকের পদ ১৭৭টি, সেখানে কর্মরত আছেন মাত্র ১৮ জন। ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে জরুরি বিভাগে একের পর এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ স্বজনদের। অন্যদিকে বহির্বিভাগেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে রোগীদের, তবুও চিকিৎসকের দেখা মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে অসহায় হয়ে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

 

আপনজন হারিয়ে জরুরি বিভাগে স্বজনদের আর্তনাদ ও ক্ষোভ। বহির্বিভাগেও রোগীরা দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও চিকিৎসকের দেখা পান না। সরজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে ২৫০ শয্যার কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। কুড়িগ্রাম জেলার প্রায় ২৪ লাখ মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ২০১৬ সালে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যার উন্নীত করা হয়েছিল হাসপাতালটি।


তবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল নিয়োগ করা হয়নি। মাঝে মধ্যে ডিএমএফ (মেডিকেল সহকারী) দিয়েই জরুরি বিভাগ চালানো হচ্ছে। গত এক মাসে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও আন্তবিভাগেও একই চিত্র। টিকিট কেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও রোগীরা চিকিৎসকের দেখা পান না। ওষুধও অনেক সময় পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা ফারুক মিয়া জানান, ‘এই হাসপাতালে চিকিৎসক নেই। চিকিৎসক দেখানোর জন্য এসে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে যেতে হচ্ছে। জরুরি বিভাগেও সব সময় চিকিৎসক থাকে না। ফেসবুকে দেখেছি, গত এক মাসে এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তিনজন রোগী মারা গেছেন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের পরিবর্তে ডিএমএফ বসেছিলেন, কিন্তু তিনিও রোগী দেখতে চাননি।’

কুড়িগ্রাম সদরের পলাশবাড়ী মন্ডলপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত ৮ আগস্ট মা অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু জরুরি বিভাগে ডাক্তার ছিলেন না। রোগীর সেবা দিতে দেরি হওয়ায় মৃত্যু হয়েছে।’

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিয়েছে, তবুও চিকিৎসকের পদ পূরণ হচ্ছে না। তাই স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়েই চিকিৎসা সেবা পরিচালিত হচ্ছে। এরমধ্যে কেউ দায়িত্বে অবহেলা করলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, প্রতিদিন হাসপাতালে বহির্বিভাগে ১২০০ থেকে ১৫০০ রোগী সেবা নিতে আসেন। ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫৫০ থেকে ৬০০। হাসপাতালটিতে ১৫৯টি চিকিৎসকের শূন্য পদ ছাড়াও অন্যান্য কর্মচারীর শূন্য পদ সংখ্যা ৯১।

শেয়ার করুন