অফিস ডেস্ক
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে ‘আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তন ও করণীয়’ শীর্ষক একটি সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেলে উলিপুর প্রেস ক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পরিবেশ সচেতন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সুধীজন অংশ নেন।
সভায় কালের কণ্ঠের আঞ্চলিক প্রতিনিধি ও বসুন্ধরা শুভসংঘের উলিপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান মানুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘের উলিপুর শাখার সাবেক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা।
উলিপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার উলিপুর প্রতিনিধি উত্তম কুমার সেন লক্ষ্মণ গুপ্তের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন দি হাঙ্গার প্রজেক্টের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রাজেশ দে।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন উলিপুর প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিক নুরবক্ত মিয়া, নুরুজ্জামান সরকার,বসুন্ধরা শুভসংঘ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সদস্য রাশেদুল আনম অপু প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন, নদীমাতৃক জেলা কুড়িগ্রামে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটেছে। বর্ষা মৌসুমেও নদীগুলোতে পানি নেই।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হলে আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় নতুন প্রজন্মকে সচেতন হতে হবে। এ জন্য তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা ও কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
প্রধান আলোচক হিসেবে রাজেশ দে বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের নানাবিধ সমস্যায় ফেলে দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরো কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অসময়ে অনাবৃষ্টি, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়সহ অতিগরম আবহাওয়া তৈরি হচ্ছে। ফলে বেশি করে গাছ লাগিয়ে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করা উচিত।
এ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে হবে। সৌর বিদ্যুৎ পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। সৌর, বায়ু, জলবিদ্যুৎ এবং বায়োগ্যাসের মতো নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার জরুরি। প্লাস্টিকজাতীয় বর্জ্য এবং পলিথিনের ব্যবহার কমাতে হবে। এই প্লাস্টিকজাতীয় বর্জ্য সহজে নষ্ট হয় না, যার কারণে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়। বাংলাদেশের জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় বেশি করে বনাঞ্চল বাড়াতে হবে বলেও জানান তিনি।
সমাপনী বক্তব্যে উলিপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সেন লক্ষ্মণ গুপ্ত বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ একটি মানবিক ও সামাজিক সংগঠন। সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে নানামুখী সামাজিক কাজ করে আসছে। বসুন্ধরা শুভসংঘ দেশপ্রেম ও সমাজসেবায় অনন্য ভূমিকা রাখছে। তারা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ, শীতবস্ত্র প্রদান, বৃক্ষরোপণ, রক্তদানের মতো মহৎ কাজগুলো তারা করে থাকেন। আমরা চাই দেশ ও জাতির কল্যাণে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র। তাদের এই পথচলা হোক দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক কামাল হোসেন, শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, নাছিমা খাতুন, সাংবাদিক আবুল কালাম, শিমুল দেব, খালেক পারভেজ লালু,পল্লী চিকিৎসক সাহেব আলী প্রমুখ।