ভালুকায় রামবুটানের বাণিজ্যিক চাষ, বাম্পার ফলন

ওষুধি ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিদেশি ফল রামবুটানের বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে ময়মনসিংহের ভালুকায়। গাছ প্রতি ফল ধরছে ৮০ থেকে ১২০ কেজি। চলতি মৌসুমে অর্ধকোটি টাকা‌ আয়ের আশা বাগান মালিকদের। অপ্রচলিত এই ফল চাষ পদ্ধতি জানতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন ভালুকায়। আর আগ্রহী কৃষক ও উদ্যোক্তাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫ | সময়ঃ ০৫:০৬
photo

গাছ প্রতি রামবুটান ধরছে ৮০ থেকে ১২০ কেজি।

 

লিচুর মতো স্বাদের রামবুটান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় ফল। ময়মনসিংহের ভালুকায়— বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে এর চাষাবাদ।


উপজেলার বিরুনিয়া ইউনিয়নের গোয়ারী গ্রামে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসা ও শিক্ষকতার পাশাপাশি ৬ একর জমি লিজ নিয়ে ফলের বাগান করেন চাচা-ভাতিজা শেখ মামুন ও আশরাফ উদ্দিন শুভ। থাইল্যান্ড থেকে ৪০০ রামবুটান গাছের চারা আমদানি করে ২০২০ সালে বাগান করেন তারা। বর্তমানে ২১২টি গাছ বেঁচে আছে, যেগুলোতে ২০২৩ সালে প্রথম ফল আসতে শুরু করে। এ বছর হয়েছে বাম্পার ফলন। কাঁচা অবস্থায় ফলটি সবুজ বর্ণের হলেও পাকার পর টকটকে লাল রং ধারণ করে। সুস্বাদের পাশাপাশি রয়েছে ওষুধি ও পুষ্টিগুণ। বাগান ও চাষ পদ্ধতি জানতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই আসছেন গ্রামটিতে।


গাছে ধরে আছে রামবুটান। চলতি মৌসুমে অর্ধকোটি টাকা‌ আয়ের আশা বাগান মালিকদের।

 

তাইফ এগ্রোর উদ্যোক্তা শেখ মামুন বলেন, ‘অন্যদের মতো আমরাও প্রথম দেশের প্রচলিত ফলের চাষ করেছিলাম। কিন্তু দেখলাম তাতে বাজারে কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়া যায় না। সেজন্য চিন্তা করলাম ব্যতিক্রম কিছু করা যায় কিনা। সেই চিন্তা থেকে আমরা থাইল্যান্ড থেকে রামবুটানের চারাগাছ এনে বাগানে রোপণ করি এবং দেড় বছরের মাথাতেই ফল আসতে শুরু করে।’


রাঙামাটি /অ্যারাবিকা জাতের কফি চাষে হেক্টরপ্রতি আয় ১৪ লাখ টাকা!

 

উদ্যোক্তাদের আরেকজন আশরাফ উদ্দিন শুভ বলেন, ‘শুরুতে রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে গাছে মড়ক দেখা দেয়। বর্তমানে ২১২টি রামবুটান গাছে ফল ধরেছে। রামবুটান বাগানে ২০২৩ সালে প্রথম ফল আসতে শুরু করে। ২০২৪ সালেও কিছু ফল আসে। তবে সেগুলো আমরা রাখিনি। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারে ফলন বেড়েছে দ্বিগুণ। তবে এ বছর সব গাছভর্তি ফল এসেছে। প্রতিটি গাছে ৮০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত ফল ধরেছে। প্রতি কেজি ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামান বলেন, ‘ফলটি আসলে খুবই সুস্বাদু। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এবং এই ফলে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। রামবুটান যেহেতু বিদেশি ফল সেহেতু আমরা অনেকেই পরিচিত না। আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রথম কাজ হচ্ছে এটি মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়া। এটি চাষে যারা আগ্রহী হবেন তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।’

জুন-জুলাই ও নভেম্বর-ডিসেম্বর; এই দুই মৌসুমে বাজারজাত হয় রামবুটান। এবার এ বাগান থেকে ১০ মেট্রিক টনের বেশি ফল তোলার আশা উদ্যোক্তাদের। যার বাজার মূল্য ৫০ লাখ টাকারও বেশি।

শেয়ার করুন