জামায়াত ও ইশরাকের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা হাতে পেলে ব্যবস্থা: ইসি

NewsDesk
প্রতিবেদন প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫ | সময়ঃ ০৫:১৮
photo

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণার বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা হাতে পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ দুটি বিষয়ে এখন পর্যন্ত আদালতের রায় বা নির্দেশনা ও পর্যবেক্ষণের কপি হাতে পায়নি ইসি।

আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীকের ব্যাপারে আদালতের কোনো ‘অবজারভেশন’ ইসি হাতে পায়নি। এটি পাওয়ার পর এ বিষয়ে আইনগতভাবে যেটা প্রযোজ্য, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনগতভাবে যা প্রাপ্য, তারা তা পাবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ইশরাকের বিষয়েও আদালতের কোনো নির্দেশনা এখনো ইসি পায়নি। কিছু ‘অবজারভেশন’ এবং নির্দেশনা এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে এক যুগ আগে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আজ বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

২০০৮ সালের নভেম্বরে জামায়াতকে নিবন্ধন সনদ দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে ইসির দেওয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি।

চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা ওই বছরই আপিল হিসেবে রূপান্তরিত হয়। পাশাপাশি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে দলটি।

তবে হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে জামায়াত আবেদন করে, যা ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের তৎকালীন চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। এরপর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি।

অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে নির্বাচন হয় ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ইশরাক হোসেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়র পদ থেকে শেখ ফজলে নূর তাপসকে অপসারণ করে সরকার। অন্যদিকে চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে গত সিটি নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে ইসি।

ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় এবং ইসির গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ। শুনানি নিয়ে রিট সরাসরি খারিজ করে ২২ মে আদেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের বিরুদ্ধে মেয়র ঘোষণা ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে ২৬ মে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। পরদিন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত লিভ টু আপিলটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে পর্যবেক্ষণসহ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে গত বৃহস্পতিবার আদেশ দেন আদালত।

শেয়ার করুন