অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, সময়ঃ ০৫:৫৫
ভাষা, সংস্কৃতি আর হাজার মাইল দূরের ব্যবধান—সবকিছুকেই হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ধর্ম, জাতি কিংবা জাতীয়তার পার্থক্যও থামাতে পারেনি দুজন মানুষের হৃদয়ের টান। এমনই এক ব্যতিক্রমী প্রেমের গল্প রচিত হয়েছে খুলনার প্রত্যন্ত উপজেলা দাকোপে। প্রেমের টানে সুদূর চীন থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন থাম্বু জাও নামের এক চীনা যুবক। আর তার জীবনসঙ্গিনী এখন দাকোপের খ্রিষ্টানপল্লির তরুণী পিংকি সরদার।
দুই মাস আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের প্রথম পরিচয়। আলাপচারিতা থেকে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব, আর সেই বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে রূপ নেয় গভীর ভালোবাসায়। হাজার মাইল দূরে থেকেও হৃদয়ের টানে দূরত্ব ভুলে একসময় সিদ্ধান্ত নেন এই সম্পর্ককে চূড়ান্ত পরিণতি দেয়ার। প্রেমের এই অদ্ভুত সাহসিকতায় থাম্বু পাড়ি জমান বাংলাদেশে।
সম্প্রতি আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এক সপ্তাহ আগে রেজিস্ট্রি করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন থাম্বু ও পিংকি। বর্তমানে তারা খুলনার দাকোপ উপজেলায় পিংকির বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছেন। নতুন সংসার আর নতুন পরিবেশে দুজনই খুশি।
পিংকি সরদার বলেন, ‘আমরা একে অপরকে খুব ভালো বুঝি। থাম্বু খুব সৎ ও যত্নশীল। এখন আমাদের জীবন অনেক আনন্দের মধ্যে কাটছে।’
নতুন শ্বশুরবাড়ির পরিবেশেও ধীরে ধীরে মানিয়ে নিচ্ছেন থাম্বু। যদিও ভাষাগত কিছু সমস্যায় পড়ছেন, তবে প্রযুক্তির সহায়তায় মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিজের কথা তুলে ধরছেন পিংকির পরিবারের কাছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরাও নতুন এই অতিথিকে বেশ সাদরে গ্রহণ করেছেন। পাড়াপড়শিরা প্রতিদিন ভিড় করছেন পিংকিদের বাড়িতে—চোখের দেখা দেখতে এই ব্যতিক্রমী প্রেমের সাক্ষ্য।
থাম্বু বলেন, ‘ফেসবুকে পিংকির সঙ্গে আমার পরিচয়। প্রথম দেখাতেই আমি বুঝতে পারি ও একজন ভালো মানুষ। আমরা কিছুদিন প্রেম করি এবং পরে বিয়ে করি। এখন ওর বাড়িতে থাকছি। এখানকার পরিবেশ বেশ ভালো লেগেছে।’
ঘুরতে গিয়ে নিজেদের ফ্রেমবন্দি করছেন নবদম্পতি।
খাবারেও ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন থাম্বু। মসলা ও রান্নার ভিন্নতা শুরুতে কিছুটা চমকে দিলেও এখন সেটা উপভোগ করছেন বলেও জানান তিনি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে স্ত্রী পিংকিকে নিয়ে চীন সফরের পরিকল্পনাও রয়েছে তার।
ভালোবাসার টানে নওগাঁয় ছুটে এলেন মালয়েশিয়ান তরুণী
থাম্বু জানিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশে বসবাস করতে আগ্রহী। পাশাপাশি এখানে ছোটখাটো কোনো ব্যবসা শুরু করারও পরিকল্পনা রয়েছে তার।
প্রতিবেশীরা বলছেন, এই যুগে এমন সাহসী প্রেম বিরল। ছেলেটা ভদ্র, শান্ত। তারা চান নতুন এই দম্পতি সুখে থাকুক।
© North Bangla News ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সতর্কতাঃ অনুমতি ব্যতীত কোন সংবাদ বা ছবি প্রকাশ বা ব্যবহার করা যাবে না।